মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
জিয়া উদ্দিন সিকদার কে ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সংবর্ধনা প্রার্থীদের মাঝে এখনো আতঙ্ক কাটেনি: সাইফুল হক প্রার্থীদের ক্যাম্পিং ও জনগণের ভোটের নিরাপত্তা পেলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে – ব্যারিস্টার ফুয়াদ মৃত চাচার পালক পুত্রকে ওয়ারিশ হিসেবে উপস্থাপনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন বরিশাল-৪ আসনে জামায়াত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন সোমবার, কতজন তুললেন জমা দিলেন তারেক রহমান ঢাকা-১৭ আসনে বেস্ট প্রার্থী: পার্থ তাসনিম জারার পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন আখতার পদত্যাগকারীদের বিষয়ে যা বললেন নাহিদ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে স্বর্ণ কলাপাড়ায় ঘন কুয়াশার সঙ্গে বেড়েছে শীতের তীব্রতা পটুয়াখালী-০৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়ন পত্র দাখিল কলাপাড়া পৌর মহিলা দলের মতবিনিময় সভা ও দোয়া মোনাজাত স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার সময় মাঝ নদীতে প্রাণ হারালেন স্বামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিতরাও সক্রিয়
‘প্রতিবন্ধিতা’ হার মেনেছে বিজয় সাঁওতালের কাছে

‘প্রতিবন্ধিতা’ হার মেনেছে বিজয় সাঁওতালের কাছে

Sharing is caring!

চা বাগানের পাকা পথ ঘিরে নির্জন বিকেল। হঠাৎ করে কেউ হয়তো আসছে এ পথ ধরে, তারপরই এখানে শূন্যতা নামে। দূর গাছের ওই মাথায় পাহাড়ি পাখির ডাকে এ পরিবেশকে অন্যরকম রূপ দিয়ে রেখেছে।

এমন অলস দুপুরের নির্জনতা ঘিরে চা গাছগুলোতে দিবসের শেষ রোদের মাখামাখি। সম্প্রতি মিরতিঙ্গা চা বাগানের প্রতিবন্ধী পৌঢ় বিজয় সাঁওতাল এমন বৈকালিক নির্জন পথিক। কাঁধে তুলে লাকড়ির বোঝা নিঃশব্দে জীবনের বহমান দারিদ্রতা আর জটিলতার জানান দেয়।

 তবে বিজয় হার মানিয়েছেন তার শারীরিক অক্ষমতাকে। সেইসঙ্গে ক্ষুদ্রাকার মানুষ তিনি। উচ্চতা তেমন নেই বললেই চলে। প্রতিদিন রুটিনমাফিক কর্তব্যকর্মে ছাপিয়ে পড়তে হয়। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে বিকেলে ফেরা। সবকিছুই যেন চলমান বেঁচে থাকার তাগিদে।

বিজয় সাঁওতাল বলেন, ‘আমার কী কথা শুনবেন বাবু? আমার তো পোড়াকপাল। ছোট থেকেই হাঁটতে পারি না। বাবা-কাকারা বলেছেন, জন্মের পর একটা অসুখ হয়েছিল। তারপর থেকেই হাঁটার শক্তি হারিয়ে ফেলি আমি। তবে আমি বসে খাই না। কাজ করে খাই।’

কাজের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার বড় ভাই সত্য সাঁওতালের সঙ্গে থাকি। বৌদি অনিকা সাঁওতাল আমাকে তার নিজের সন্তানের মতোই দেখেন। ভাইয়ের পরিবারকে দেখাশোনা করি। আমাদের পাঁচটি গরু আছে। প্রতিদিন সকালে সেগুলোকে নম্বরে নিয়ে যেতে হয় ঘাস খাওয়ানোর জন্য। সারাদিন গরুগুলোকে এদিক-ওদিক চরিয়ে বিকেলে বাড়ি নিয়ে আসি।’

তিন মাস পর পর ২১০০ টাকা করে বয়স্কভাতা পাই। ভাইয়ের দেওয়া কিছু টাকা আর সরকারি ভাতার টাকা দিয়ে আমার কোনো মতো চলে যায় বলে জানান বিজয়।

বিয়ে-শাদির কথা বলতেই মলিনতা ঘিরে ধরে তার মুখমণ্ডলে। ‘আমাকে কে বিয়ে করবে বাবু? আমি তো ঠিক মতো হাঁটতে পারি না, খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটি।

মিংতিঙ্গা চা বাগানের চা শ্রমিক বাদল ভূঁইয়া বলেন, বিজয় সাঁওতাল অনেক কষ্ট করে জীবনে। বিয়ে করেনি। ভাইয়ের সংসারকে নিজের মনে করে আকড়ে ধরে আছে। সংসারের দৈনিক কাজকর্ম করেই জীবন পার করে দিচ্ছে সে।

যারা বিজয় সাঁওতালের মতো প্রতিবন্ধী, যারা স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে না অথচ দৈনিক কর্তব্য পালন করে চলে সুন্দরভাবে তারাই কর্মবীর। সময়ের মানদণ্ডে উজ্জ্বল হতে থাকে তাদের কর্মগাঁথা।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD